ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহ বার্ষিকী পালন করা কি জায়েজ
আসসালামু আলাইকুম। ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহ বার্ষিকী পালন করা কি জায়েজ — আসলে বিবাহ বার্ষিকী পালন, জন্মদিন ও মৃত্যুদিন পালন অর্থাৎ কোন দিবস পালনের অস্তিত্ব ইসলামে নেই। এগুলো পশ্চিমা সংস্কৃতি এবং অন্যান্য ধর্ম থেকে এসেছে। যা ব্যাপকভাবে আমাদের মধ্যে প্রসার লাভ করেছে। এটা আমরা গ্রহণ করতে পারি না।
আজকে আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহ বার্ষিকী পালন করা কি জায়েজ এ বিষয়ে, ইনশাআল্লাহ।
ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহ বার্ষিকী পালন করা কি জায়েজ
ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহ বার্ষিকী পালন করা কি জায়েজ এ বিষয়ে কুরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক কোন বর্ণনা পাওয়া না গেলেও এটা স্পষ্ট যে ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহ বার্ষিকী কিংবা কোন দিবস পালন করার কোন ভিত্তি নেই। বিবাহ বার্ষিকী জায়েজ এ সম্পর্কে কোন দলিল পাওয়া যায়নি।
ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহ বার্ষিকী পালন করা জায়েজ নেই। বিবাহ বার্ষিকী পালন করা এবং অন্যান্য দিবস পালনের প্রচলন মূলত পশ্চিমা সংস্কৃতি থেকেই এসেছে।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো এসব দিবস পালন করেননি।এমনকি তার পূর্ববর্তী নবী রাসূলগণ কিংবা সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈনগণ এবং তাবে তাবেঈ গণসহ পূর্ববর্তী মহান ব্যক্তিদের থেকে বিবাহ বার্ষিকী পালন এবং জন্মদিন পালনের কোন প্রমাণ নেই।
ইসলামের দৃষ্টিতে আমাদের প্রতিটি দিনই খুশির দিন। প্রতিদিনই স্ত্রী স্বামীকে এবং স্বামী স্ত্রীকে খুশি রাখার দিন। আমাদের স্ত্রীরা সবসময় স্বামীর জন্য খুশির কারণ, স্বামীরা সবসময় স্ত্রীদের জন্য খুশির কারণ।এর জন্য কোন আলাদা বার্ষিকীর প্রয়োজন হয় না। এটা কোন সুনির্দিষ্ট দিনেও নয়।
তবে হঠাৎ করে যদি স্বামী-স্ত্রী বিয়ের দিনটি মনে পড়ে যায় যে, এই দিনে আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা একে অপরের জীবনসঙ্গী হয়েছিলাম কিংবা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলাম; এই ভেবে যদি যদি ঘরোয়া পরিবেশে নিজেদের বিবাহের বিশেষ দিনকে স্মরণ করে শুধুমাত্র নিজেরাই উদযাপন করেন তাতে দোষের কিছু নেই।
কিন্তু ঝাঁকজমক উৎসব আয়োজন এর মধ্য দিয়ে বিবাহ বার্ষিকী পালন কিংবা অন্যান্য কোন বার্ষিকী পালন করা ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ নেই। কেননা,এ বিষয়ে হাদিসের বর্ণনা এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন— যে ব্যক্তি আমার দলভুক্ত নয়, সে আমাদের ছেড়ে অন্য কোন জাতির সাদৃশ অবলম্বন করে। তোমরা ইহুদিদের সাদৃশ্য অবলম্বন করো না, খ্রিস্টানদেরও সাদৃশ্য অবলম্বন করো না। [ সিলসিলাহ সহীহা : ২১৯৪]
অনেকে নিজেদের বিবাহ বার্ষিকী কিংবা জন্মদিন উপলক্ষে ইবাদত-আমল এবং দান-সদকা করে থাকেন। যা ইসলামের দৃষ্টিতে ভিত্তিহীন। তবে ইবাদাত ও আমল করা সওয়াবের কাজ। এবং গরিবদের দান-সাদকা করা, খাওয়ানো এবং কাউকে উপহার দেওয়াও সাওয়াবের কাজ। তাই বলে এই নয় যে কারো বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে কিংবা জন্মদিন উপলক্ষে এ ধরনের কর্মকাণ্ড করলে সওয়াব হবে।
শুধুমাত্র যে বিবাহ বার্ষিকী পালন কিংবা জন্মদিন উপলক্ষে এর সকল সওয়াবের কাজ ও আমল করতে হবে ঠিক তাই নয়। আপনি চাইলে এই দিনগুলো ছাড়াও অনন্য দিনগুলোতে এ সকল ভাল কাজ করতে পারেন।
বিবাহ বার্ষিকী হাদিস
বিবাহ বার্ষিকী, জন্মদিন, মৃত্যুদিন, বাবা দিবস, মা দিবস প্রভৃতি এসব দিবস পালন বিজাতীয় অপসংস্কৃতির অনুকরণ মাত্র।