তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কয়টা থেকে কয়টা পর্যন্ত

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কয়টা থেকে কয়টা পর্যন্ত—  তাহাজ্জুদ নামাজ ইশার নামাজের পর বিতর নামাজের আগে থেকে শুরু করে ফযরের নামাজের আগ পর্যন্ত পড়া যাবে। তাহাজ্জুদ নামাজ হলো রাতের নামাজ। আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য এ নামাজ আদায় হয়ে থাকে। তাহাজ্জুদ নামাজ রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পড়া উত্তম। তবে ঘুম থেকে না জাগার সম্ভাবনা থাকলে ইশার নামাজের পর বিতরের আগে তা পড়ে নেয়া যাবে। তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কয়টা থেকে কয়টা পর্যন্ত এ সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 




তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কয়টা থেকে কয়টা পর্যন্ত




তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কয়টা থেকে কয়টা পর্যন্ত


তাহাজ্জুদ নামাজের সময় ইশার নামাজের পর বিতর নামাজের আগে থেকে শুরু করে সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত পড়া যায়। তবে ইশার নামাজের পর নামাজে কিয়ামুল লাইল অর্থাৎ রাতের নামাজ বলা হয়। তাহাজ্জুদ নামাজেও রাতের নামাজ বলা হয়। মূলত তাহাজ্জুদ নামাজের সময় হলো রাতের শেষ তৃতীয়াংশ। তবে ঘুম থেকে উঠার সম্ভাবনা না থাকলে ইশার নামাজের পর তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যায়। তবে তাহাজ্জুদ নামাজের সর্বোত্তম সময় হলো তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার আগে কিছু সময় ঘুমিয়ে নেওয়া অর্থাৎ রাতের শেষ তৃতীয়াংশে।



তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ে মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়। তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কয়টা থেকে কয়টা পর্যন্ত  এ সম্পর্কে হজরত আবু হোরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন—



আল্লাহ প্রতি রাতেই নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হন যখন রাতের শেষ তৃতীয় ভাগ অবশিষ্ট থাকে। তিনি তখন বলতে থাকেন- কে আছো যে আমায় ডাকবে, আর আমি তার ডাকে সাড়া দেবো? কে আছো যে আমার কাছে কিছু চাইবে, আর আমি তাকে তা দান করব? কে আছো যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আর আমি তাকে ক্ষমা করব?

 [সহীহ বুখারি ও সহীহ মুসলিম]





তাহাজ্জুদ নামাজ


তাহাজ্জুদ নামাজ হলো রাতের নামাজ বা কিয়ামুল লাইল নামেও পরিচিত। মুসলমানদের জন্য এটি ঐচ্ছিক ইবাদত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিয়মিত তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেন এবং সাহাবীদের পালনে উৎসাহিত করতেন।আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত—


আমি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে উত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ।


পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পর সব থেকে ফজিলতপূর্ণ নামাজ হলো তাহাজ্জুদ নামাজ। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়া’লা তাহাজ্জুদ নামাজের নাম ধরে উল্লেখ করেছেন।



তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কয়টা থেকে কয়টা পর্যন্ত অর্থাৎ কখন তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে হবে এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তায়া’লা বলেন— 



وَمِنَ الَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهٖ نَافِلَةً لَّكَ ‌ۖ  عَسٰۤى اَنْ يَّبْعَـثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَّحْمُوْدًا


এবং রাত্রির কিছু অংশে তাহাজ্জুদ কায়েম করিবে, ইহা তোমার এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায় তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করিবেন প্রশংসিত স্থানে।

[সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত : ৭৯]





তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত কি কি?



তাহাজ্জুদ নামাজ হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পর সব থেকে ফজিলতপূর্ণ নামাজ।এবং আল্লাহ তায়া’লা সন্তুষ্টি অর্জন ও নৈকট্য লাভের মাধ্যম। তাহাজ্জুদ নামাজের মধ্য দিয়ে বান্দা রবের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। পবিত্র কুরআনুল কারিমে ও হাদিস শরীফে তাহাজ্জুদ নামাজের অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।



তাহাজ্জুদ নামাজ হলো গোপন ইবাদত। আল্লাহ তার বান্দাদের ক্ষমা করার জন্য আসমানে অবতরণ করেন। হজরত আবু হোরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন—



আল্লাহ প্রতি রাতেই নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হন যখন রাতের শেষ তৃতীয় ভাগ অবশিষ্ট থাকে। তিনি তখন বলতে থাকেন- কে আছো যে আমায় ডাকবে, আর আমি তার ডাকে সাড়া দেবো? কে আছো যে আমার কাছে কিছু চাইবে, আর আমি তাকে তা দান করব? কে আছো যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আর আমি তাকে ক্ষমা করব?

 [সহীহ বুখারি ও সহীহ মুসলিম]





তাহাজ্জুদ নামাজ সর্বনিম্ন কত রাকাত পড়তে হবে?



তাহাজ্জুদ নামাজ সর্বনিম্ন দুই রাকাত পড়া যায়। তাহাজ্জুদ নামাজ ২ থেকে ১২ রাকাআত পর্যন্ত পড়ার বর্ণনা পাওযা যায়। সর্ব নিম্ন ২ রাকাআত আর সর্বোচ্চ ১২ রাকাআত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ পড়তেন। তাই ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ পড়াই ভালো। তবে এটা পড়া আবশ্যক নয়। চাইলে এর থেকে বেশি  বা কমও পড়া যাবে। 




তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া কি সুন্নত নাকি নফল?


তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া সুন্নত বা নফল দুটোই। ফরজ  ছাড়াও রাসূল (সাঃ) যে নামাজ আদায় করতেন সে গুলো সবই সুন্নত বা নফল। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের আগে ও পরে সে নামাজ পড়তেন তা হলো সুন্নত। তার বাইরে যে নামাজ আদায় করতেন তা নফল বলে ধরা হয়। নফল হলো অতিরিক্ত তেমনি সুন্নতও হলো ফরজের অতিরিক্ত। 


রাসূল (সাঃ) যা করতেন কিংবা করার নির্দেশ দিয়েছেন তাকে আমরা সুন্নত বলে জানি। তাহাজ্জুদ নামাজ রাসূল (সাঃ) ছাড়তে না করেছেন, তাই এ নামাজকে সুন্নত হিসেবে ধরা হয়। আবার নফল হলো অতিরিক্ত নামাজ। যার কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই, তাহাজ্জুদ নামাজের ও কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই  তাই একে নফল ধরা হয়।


সুতরাং তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া কি সুন্নত নাকি নফল  সেটা না ভেবে আপনি সুন্নত বা নফল যে নিয়ত করে নামাজ পড়বেন তাতেই আদায় হয়ে যাবে।  






বেতের নামাজের পর তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যাবে কি?


বেতের নামাজের পর তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যাবে, তবে  যদি ঘুম থেকে উঠার সম্ভাবনা না থাকে তাহলে এশার নামাজের সাথে বেতেরের নামাজ পড়ে ঘুমানো উত্তম। কেননা রাসূল (সাঃ) ঘুমানোর আগে বিতরের নামাজ পড়তে বলেছেন। রাসূল (সাঃ) তাহাজ্জুদ নামাজের পরে বেতেরের নামাজ পড়তেন।

সুতরাং তাহাজ্জুদ নামাজ  বিতর নামাজের আগে বা পরে দুই সময়েই পড়া যায়।

Next Post Previous Post